ঈদুল ফিতরের ছুটির মধ্যে বাড়ানো হলো দাম। নতুন দামে শনিবার থেকে বিক্রি হওয়ার কথা ভোজ্যতেল। তবে বৃহস্পতিবার দাম বাড়ানোর ঘোষণার পরপরই বাজার থেকে প্রায় ‘উধাও’ হয়ে গেছে রান্নার এই গুরুত্বপূর্ণ পণ্যটি।

শুক্রবার সরেজমিনে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল বাজার, মগবাজার, দিলুরোড, বাংলামোটর, মহাখালীসহ বেশ কিছু এলাকায় বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। কিছু দোকানে মিললেও দোকানি হাঁকেন বাড়তি দাম। আবার তা ক্রেতার চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।

দাম বাড়িয়ে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকায় আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ এবং পাম সুপার ১৭২ টাকা দরে বিক্রি করতে ঠিক করে দিয়েছে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

ভোজ্যতেল পরিশোধন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান মালিকদের এই সংগঠনের ঘোষণা অনুযায়ী শনিবার থেকে নতুন দামে ভোজ্যতেল বিক্রির কথা।

তবে আজ ক্রেতাদের অনেকেই ভোজ্যতেল কিনতে এসে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সয়াবিন তেল না পেয়ে তাদের কেউ কেউ সরিষার তেল, রাইসবার্ন, সূর্যমুখী তেল কিনেছেন। তবে এসব তেলের দাম বেশি হওয়ায় হাতে গোণা কিছু ক্রেতাকেই সেগুলি কিনতে দেখা গেছে।

অন্যদিকে কেবল রাজধানীতেই নয় মফস্বলের বাজারগুলোতেও রাতারাতি উধাও হয়ে গেছে সয়াবিন তেল। ময়মনসিংহের গফরগাঁও থেকে জানিয়েছেন, তিনি কয়েকটি বাজার ঘুরেও সয়াবিন তেলের দেখা পাননি। ঈদের সময় অতিথি আপ্যায়ণের জন্য নিরুপায় হয়ে রাইসবার্ন কিনেছেন।

খুচরা ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, তাদের কাছে সয়াবিন তেল না থাকার কোম্পানিগুলো থেকে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না। তাই হঠাৎ করে এই সংকট। কতদিন ধরে তেল আসছে না জানতে চাইলে হাতিরপুল বাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন প্রশ্নটি এড়িয়ে কোনো উত্তর দেননি।

মগবাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী মালেক হোসেন বলেন, ‘কিছুদিন ধরেই তেলের চালান কম ছিলো। দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর এখন ডিলারের থেকেই আর তেল পাচ্ছি না। কয়েকদিন পর থেকে হয়তো চালান পেতে পারি। এখানকার আরেক ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বড়বাজারে গেলে নির্ধারিত দামের চেয়ে উচ্চমূল্যে তেল পাবেন। তবে আমরা পাইকারদের কাছ থেকে তেল পাচ্ছি না। আবার তেল কেনার সময় রশিদ চাওয়া হলে তার আর তেল বিক্রি করতে চায় না।’

দিলুরোডের বিসমিল্লাহ জেনারেল স্টোরে ভোজ্যতেল কিনতে এসেছিলেন ইসমাইল সরদার। কিনতে না পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করে ঢাকা টাইমসকে এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে বলেন, ‘দুদিন পর পর তেলের দাম বাড়ে আর বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। অথচ নিত্যদিনই সয়াবিন তেলের প্রয়োজন হয়। আমরা সাধারণরা যেন ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি।’ একটি প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মী বিজয় দাস বলেন, ‘দামও বাড়াচ্ছে আবার কৃত্রিম সংকটও তৈরি করা হচ্ছে। টাকা দিয়েও তেল মিলছে না। এই জিম্মিদশার প্রতিকার পাওয়ারই যেন কোনো রাস্তা নেই। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো স্বল্পআয়ের মানুষের খাবারদাবারই বন্ধ হয়ে যাবে।’

তথ্যসূত্র: ঢাকা টাইমস